Cancel all exams and clear all the backlog students of Burdwan University in 2020
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্রছাত্রীবৃন্দ,
আমরা, বর্ধমান ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা নানা সমস্যায় জর্জরিত। পরীক্ষা দেওয়ার ৬-৭মাস পরেও ওল্ড সিলেবাসের বন্ধুরা রেজাল্ট পাচ্ছিল না। তারপর আমাদেরই করা গন ই-মেলের কয়েকদিনের মধ্যে বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ ওল্ড সিলেবাসের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের রেজাল্ট অনলাইনে পাবলিশ করে। কিন্তু তার পরেও আমাদেরই ৩৫০০-৪০০০জন বন্ধু আশানুরূপ ফল পায়নি। করোনার মতো অতিমারির জন্য এখনো হাতে মার্কশিটও পায়নি তারা। ফলে ভীষণই দুঃচিন্তায় দিন কাটছে প্রত্যেকের।
করোনা অতিমারির মধ্যে সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এত ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব মেনে পরীক্ষা নেওয়ার সুষ্ঠ পরিকাঠামো আমাদের দেশে নেই। তাছাড়া যাতায়াতের ক্ষেত্রে তো শারীরিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয় কোনোভাবেই। সমস্ত কিছু চিন্তাভাবনা করেই UGC সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি ক্যান্সেল করে। গত 27th June রাজ্য সরকারও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অ্যাসাইনমেন্ট (৮০:২০) পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ও ব্যাকলগ স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে বেস্ট পার্সেন্টেজ অনুযায়ী মূল্যায়ন করার প্রস্তাব দেয়।
কিন্তু এরপরেই গত 6th July কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে MHRD ও UGC এই অতিমারী পরিস্থিতেও সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা দিতেই হবে এমন নির্দেশ পাঠায়।
স্বাভাবিক ভাবেই এই খামখেয়ালি ছাত্রছাত্রীবিরোধী সিদ্ধান্তর জন্য আমরা প্রত্যেকেই ভীষণ হতাশার মধ্যে রয়েছি। আমাদের জীবনগুলো এখন অনেকটা গবেষণাগারের গিনিপিগের মতো যেন! উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা ক্যান্সেল হলেও হুট করে আমাদের ক্ষেত্রে এমন বিরূপ আচরণের কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছিনা। এদিকে রাজস্থান, পাঞ্জাব, দিল্লির মতো রাজ্যগুলো/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন্দ্রীয় সরকার MHRD ও UGCকে জানিয়ে দিয়েছে তারা অলরেডি করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে এসাইনমেন্ট (৮০:২০) পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন করার প্রসিডিউর শুরু করে দিয়েছে। ফলে MHRD ও UGC-র পাঠানো নতুন নির্দেশিকা মানা সম্ভব নয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারও MHRD ও UGCকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে এই অতিমারী পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের MHRD ও UGCর নতুন নির্দেশিকা মেনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্যের উপাচার্য পরিষদের মিটিংয়ের রেজোলিউশনেও রাজ্যের পদ্ধতি মেনে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় আমাদের দাবী এই যে...
১) আমাদের জীবন ও ভবিষ্যৎকে প্রতিমুহূর্তে এভাবে সংশয়ের মধ্যে না ঠেলে দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তের কথা অফিসিয়ালি ঘোষণা করা হোক।
২) স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের দাম আছে। শুধু আমারাই নয়, আমাদের সাথে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের পরিবার-পরিজন সর্বোপরি বৃহত্তর সমাজ। তাই রাজ্য সরকার ও উপাচার্য পরিষদের মিটিংয়ের রেজোলিউশন অনুযায়ী এসাইনমেন্ট (৮০:২০) অনুপাতেই মূল্যায়ন করা হোক।
৩) রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যাকলগ স্টুডেন্টদের বেস্ট পার্সেন্টেজ দিয়ে মূল্যায়ন করা হোক।নাহলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫০০-৪০০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ সম্পূর্ন ভাবে অন্ধকার হয়ে যাবে।
৪) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই প্রান্তিক পরিবার থেকে উঠে আসা। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লকডাউনের জেরে সকলের অর্থনৈতিক অবস্থাই শূন্যে এসে ঠেকেছে। অনুগ্রহ করে এই দিকটি বিবেচনা করে দেখা হোক। আমাদের দাবী এই বছরের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ফি মুকুব করুক। নাহলে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদেরই ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে কলেজ/ইউনিভার্সিটির সমস্ত ফি মেটাতে বাধ্য হবে নইলে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে ফি জোগাতে না পারার জন্য। মানবিক ভাবে দিকটি বিবেচনা করা হোক।
৫) হাজার রকম সংশয়ের মধ্যে থাকতে থাকতে অনেক বন্ধুই ডিপ্রেশনে ভুগছে। আমাদের আর্জি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তার অধীনে থাকা কলেজগুলোকে নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটি লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দিক। প্রয়োজনে কলেজ কর্তৃপক্ষ যেন ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
৬) এই সমস্ত দিক বিবেচনা করে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক। তাতে সামগ্রিক দুশ্চিন্তা থেকে আমরা হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীরা ও আমাদের পরিবার-পরিজন সাময়িক বিরতি পাবো।
SHARE THIS PETITION WITH YOUR FRIENDS
ধন্যবাদান্তে,
অরিন্দম পোড়েল
Arindam Porel Contact the author of the petition